স্যুট পরে আর পার্লারে সেজে এসে খাল পরিষ্কার হবে না: নেতা-নেত্রীদের মির্জা ফখরুল

বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত খাল পরিষ্কার কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে দলের নেতাদের অতিরিক্ত সাজ-পোশাকের সমালোচনা করেছেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘নেতারা তো আজকে কোট-স্যুট পরে আসছেন। সবাই স্যুট-বুট পরে আসছেন। এভাবে কি খাল পরিষ্কার করা যাবে? যাবে না। গামবুট পরেন বা হাফপ্যান্ট পরেন, সবাই উৎসাহ নিয়ে নামেন। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর উত্তরার ১৫ নম্বর সেক্টরে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি আয়োজিত খাল পরিষ্কার কর্মসূচিতে এসব কথা বলেন তিনি। মহাসচিব বলেন, নারীনেত্রীরা কেউ কেউ পার্লার থেকেও আসছেন। এভাবে হবে না। জনগণের কাছে যেতে হবে, বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিএনপির কথা বলতে হবে। শুধু স্লোগান দিলে বা তালি বাজালে রাজনীতি হয় না।

তিনি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের খাল ও নদী পুনঃখননের কাজের উদাহরণ দিয়ে বলেন, জিয়া সাহেব যেমন কাজ করেছেন, আমরাও করতে চাই।

প্রতিবছর বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মাধ্যমে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হলেও এবার ভিন্নধর্মী উদ্যোগ হিসেবে খাল পরিষ্কারের আয়োজন করা হয়। এ বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, শোভাযাত্রা করলে মানুষের ভোগান্তি হতো। তাই তারেক রহমানের নির্দেশে এবারের কর্মসূচি খাল পরিষ্কার। তিনি আরও বলেন, ‘পাঁচ মিনিট খালে নামলেই হবে না, আমরা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বাস্তবে দেখতে চাই।

ফখরুল বলেন, যদি আমরা আওয়ামী লীগের মতো চাটার দলে পরিণত হই, মানুষ আমাদের গ্রহণ করবে না। ইনশাআল্লাহ বললে হবে না, কাজে প্রমাণ করতে হবে।’ তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ছয় বছর জেল খেটেছেন, অনেক নেতা মিথ্যা মামলায় হয়রানির শিকার হয়েছেন, কেউ গুম হয়েছেন, কেউ পাড়া ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে তিনি বলেন, হাসিনা দেশ থেকে পালিয়েছে ঠিকই, কিন্তু শয়তানি ছাড়েনি। ভারতে বসে গোলমাল করাচ্ছেন।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, আমরা সব দল মিলে ইউনূস সাহেবকে দায়িত্ব দিয়েছি। ৩১ দফা সংস্কারের মধ্যেই তার দিকনির্দেশনা রয়েছে।

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে তিনি বলেন, আগে সাংবাদিকেরা লিখতে পারত না, এখন পারে। আমাদের সরকার এলে তারা আরও স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে। তিনি অভিযোগ করেন, ভারত থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভ্রান্তিকর গুজব ছড়ানো হচ্ছে। আমাদের মধ্যে বিভেদ নেই, আছে ঐক্য। এই ঐক্য নিয়েই বিজয় অর্জন করব ইনশাআল্লাহ।

খাল পরিষ্কার কর্মসূচিতে নেতা–কর্মীদের বেশিরভাগকে দেখা যায় খালের পাশে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা করতে, ছবি তুলতে এবং কিছুক্ষণের জন্য প্রতীকীভাবে খালের পাড়ে কচুরিপানা টানতে। মির্জা ফখরুল খালে গিয়েছিলেন মাত্র ১০ মিনিটের জন্য, এরপর ফিরে যান।

পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে ঢাকার উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রায় ৪০ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মীও উপস্থিত ছিলেন। খাল থেকে তোলা আবর্জনার পরিমাণ ছিল প্রায় এক ভ্যান। তবে অনেক পরিচ্ছন্নতাকর্মীকেই পুরো সময় বসে থাকতে দেখা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *