শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় রমজান মোল্লা (৩৮) নামের এক অটোরিকশাচালকের দুই চোখ উপড়ে ফেলার পাশাপাশি তার দুই হাত ও ডান পা ভাঙা ও চোখের মনি পুড়িয়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছে সুমন শিকদার নামের এক মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাজিরা উপজেলার মোহর আলী শিকদার কান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহত রমজান জাজিরা পৌরসভার দক্ষিণ বাইকশা এলাকার শফি মোল্লার ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জাজিরার দক্ষিণ বাইকশার রমজান মোল্লা অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা চালায়। শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) তিনি আটরশি যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হন।
চলন্ত পথে জাজিরার নাওডোবা ইউনিয়নের মোহর আলী শিকদার কান্দি এলাকায় সুমন শিকদার তার লোকজন নিয়ে রমজান মোল্লাকে গতিরোধ করে। এরপরে রমজান মোল্লাকে সুমন শিকদারের বাড়ির পেছনে নিয়ে যান।
তারা রমজানের দুই চোখ উপড়ে ফেলে চোখের মনি পুড়িয়ে ফেলে ও তার হাত ও পা ভেঙ্গেদেয়। স্থানীয় লোকজন মাদক ব্যবসায়ী সুমন শিকদারের বাড়ীর পেছনে শোরগোলের শব্দ শুনে ছুটে আসেন, তখন আহত অবস্থায় রমজন মোল্লাকে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন রমজান মোল্লাকে চোখ উপরে ফেলা ও হাত পা ভাঙ্গা অবস্থায় উদ্ধার করে তাকে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নিয়ে আসেন। এসময় শাহজাহান সম্রাট নামের এক ব্যক্তিকে ঘটনা স্থলেই আটক করেন স্থানীয় জনগণ। পরে তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
রমজানকে উন্নত চিকৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যালে পাঠানো হয়। এ ঘটনার পর ক্ষুব্ধ জনতা সুমনের ঘর বাড়িতে আগুন দেয়। পরে ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনী গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকাবাসী বলেন, ‘সুমন শিকদার অনেক দিন ধরে এলাকায় মাদক ও চোরাচালানে জড়িত।
কেউ তার বিরুদ্ধে কিছু বলার সাহস পেত না। এবার সে এক নিরীহ অটোচালক রমজানের চোখ তুলে, হাত-পা ভেঙে দিয়েছে—এটা কোন সুস্থ মানুষ করতে পারে না। তাই ক্ষুব্ধ জনতা তার বাড়িতে আগুন দিয়েছে।
জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. তানভির আহমেদ বলেন, ‘রমজানকে দুপুর ১টা ২০ মিনিটে আনা হয়। তার দুই চোখে ধারালো অস্ত্রের আঘাত এবং হাত-পায়ে গুরুতর জখম ছিল। তার অবস্থা আশঙ্কা জনক তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার ওসি পারভেজ আহমেদ সেলিম বলেন, ‘সুমন শিকদার মাদকসহ অন্তত ২০ মামলার আসামি। তার নেতৃত্বে রমজানের ওপর হামলার অভিযোগ পেয়েছি। জনতা তার বাড়িতে আগুন দেয় এবং এক সহযোগীকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।