জাজিরা উপজেলা প্রতিনিধি
শরীয়তপুরের জাজিরা থানায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র নামধারী কিশোর গ্যাং সদস্যদের হামলা, পুলিশকে মারধর এবং আসামী ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় থানার এএসআই মোঃ আতাউর রহমান বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখসহ ১৫ থেকে ২০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
গত রবিবার(২৬ অক্টোবর) রাত ১১টার দিকে জাজিরা থানার অভ্যন্তরে এ ঘটনা ঘটে। এসময় ২ জনকে গ্রেফতার করে জাজিরা থানা পুলিশ। পরে সোমবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে গ্রেফতারকৃত আসামীদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, ডুবিসায়বর এলাকার মাদবর কান্দির মালেক মাদবরের ছেলে ইমরান মাদবর(২০) এবং রামকৃষ্ণপুর এলাকার মাইনউদ্দিন মাদবরের ছেলে নির্জন মাদবর(২৩)।
জাজিরা থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রবিবার রাত ৯টা ১৫ মিনিটের দিকে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য ইমরান মাদবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে পিস্তল ও ওয়াকিটকি প্রদর্শনের ছবি ও ভিডিও পোস্ট করে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে। পরে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিলে এস,আই রামকৃষ্ণ দাসের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে ইমরান মাদবরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই সময় তার সাথে থাকা আরও ১২/১৪ জন সহযোগী কৌশলে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনার পরে বিলুপ্ত হওয়া বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন শরীয়তপুর শাখার সাবেক সংগঠক ও কিশোর গ্যাংয়ের প্রধান স্বপ্নীল মাদবর তার সহযোগী ১২/১৪ জনকে সঙ্গে নিয়ে থানায় প্রবেশ করে আটক ইমরানকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে এবং দায়িত্বপালনরত এ,এস,আই আতাউর রহমান ও সেন্ট্রি কনস্টেবল জলিল মিয়াকে মারধর করে আহত করে। সতর্ক সংকেত শুনে পুলিশের উপস্থিতিতে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। তবে এসময় হামলাকারীদের মধ্যে থেকে পুলিশ নির্জন মাদবরকে কে আটক করতে এবং দুটি মোটরসাইকেল জব্দ করতে সক্ষম হয়।
মামলার অন্য আসামীরা হলেন, উপজেলার রামকৃষ্ণপুর এলাকার দবির মাদবরের ছেলে স্বপ্নীল মাদবর(২৪), দক্ষিণ ডুবলদিয়া এলাকার আব্দুর রব মোল্লার ছেলে রিয়াদ মোল্যা(২১), জসিম মোল্লার ছেলে রিহাদ মোল্যা(২০), বিল্লাল মাদবরের ছেলে বাধন মাদবর(২২), রাজু মাদবরের ছেলে রাহাত মাদবর(২৩)। এছাড়াও আরও অজ্ঞাতনামা ১৫-২০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা, থানায় অনধিকার প্রবেশ, আসামী ছিনতাইয়ের চেষ্টা, অস্ত্র প্রদর্শন করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি এবং পুলিশকে মারধরের অভিযোগসহ পেনাল কোডের একাধিক ধারা দেওয়া হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শরীয়তপুরের সাবেক আহবায়ক ইমরান আল নাজির বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা পরিচ শুনে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম এবং সেখানে গিয়ে যাদেরকে দেখেছি- তারা কেউ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা নয়। আমি ওসি সাহেবকে বলে আসছি যারা অপরাধী তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হোক। আর যারা অপরাধী না এমন কাউকে যেন হয়রানি না করা হয়।
এবিষয়ে জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মোহাম্মদ মাইনুল ইসলাম বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা পরিচয় দেয়া স্বপ্নীল মাদবর একজন কিশোরগ্যাং এর গডফাদার। তার নেতৃত্ব এমন দুঃসাহসিক কাণ্ড ঘটানো হয়েছে। এছাড়াও অনেক চাঁদা আদায়ের সাথে জড়িত বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গ্রেফতারকৃত আসামীদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে এবং স্বপ্নীলসহ পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলমান রয়েছে।